Ads

কি কারণে অল্প বয়সে চুল পেকে যায় আর এর সমাধান কি? | Causes and Solutions of White hair at a young age

 

                                                                            

আসলে এমন কোন নির্দিষ্ট কারণ নেই যা মাথার চুল সাদা হওয়ার জন্য দায়বদ্ধ। তবে অনেক সময় মানুষের শরীরের নির্দিষ্ট অবস্থার জন্য মাথার চুল সাদা হওয়ার কারণ হতে পারে। কখনো কখনো সামান্য পরিমাণ সাদা মাথার চুল কমলা বা হলুদ বর্ণেরও হতে দেখা যায়। এছাড়াও কোন স্বাস্থ্য সমস্যার অবস্থায় কারনে মাথার চুল সাদা হতে পারে। মাথার চুল সাদা হওয়ার পেছনে আরো একটি কারণ ক্যাটাগরিক্যাল হতে পারে। সাধারণত যাদের ৩০ বছর বয়সের আগে চুল পেকে যায় তাদের হিসাবে এটি সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। অল্প বয়সে চুল পাকার কারণ ও প্রতিকার দেখানো হবে আজকে এই ব্লগে। এই অকালে চুল ধূসর হওয়ার বিভিন্ন কারণ হতে দেখা যায়, এখানে কয়েকটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা প্রদান করা হলো: 


১. জেনেটিক্স: অকালে চুল পেকে যাওয়ার কারণ হিসেবে বা ধূসর বর্ণ হবার পেছনে বংশগত কারণ হতে পারে। যদি আপনার বাবা-মা বা দাদা-দাদিরা প্রথম দিকে ধূসর হয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে থাকে, তবে আপনারও হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই বলা যায় জেনেটিক্স একটা বড় কারণ অকালে চুল পাকার ক্ষেত্রে।



২. স্ট্রেস: এক গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে সাধারণত যারা উচ্চমাত্রায় মানসিক চাপে জীবন যাপন করে তাদের ক্ষেত্রে অকালে চুল পেকে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে গণ্য করা হয়।   এর মূল কারণ হল স্ট্রেস শরীরকে অনেক বেশি ফ্রি র‌্যাডিকেল তৈরি করতে পারে, যা চুলের ফলিকলগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে এবং অকালে ধূসর হতে পারে। তাই সাধারণত যারা অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা এবং মানসিক প্রেসারে থাকে তাদের ক্ষেত্রে ওখানে চুল পাকাটা স্বাভাবিক।



৩. চিকিৎসা অবস্থা: কিছু চিকিৎসা শর্ত থাকে যেগুলোর কারণেও অল্প বয়সে চুল পেকে যেতে পারে। যেমন অটোইমিউন ডিসঅর্ডার, থাইরয়েড ভারসাম্যহীনতা এবং ভিটিলিগো (এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে ত্বক রঙ্গক হারায়)। শরীরের এই সকল অবস্থায় তার মাথার চুল সাদা হবার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।



৪. পুষ্টির ঘাটতি: শরীরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ঘাটতির কারনেও মানুষের মাথার চুল অকালে পেকে যেতে পারে। যেমন: ভিটামিন বি 12 এবং ফলিক অ্যাসিডের মতো নির্দিষ্ট পুষ্টির অভাব চুলের অকাল ধূসর হতে পারে। তাই শরীরে এ সকল ভিটামিনের অভাব হলে চুল অল্প বয়সেই ধূসর বর্ণের হয়ে যায়।



৫. লাইফস্টাইল ফ্যাক্টর: উক্ত সকল কারণ ছাড়াও আমাদের প্রতিনিয়ত লাইফস্টাইল এর ভেতরেও এমন কিছু অভ্যাস রয়েছে যেগুলোর কারণেও আমাদের চুল অল্প বয়সেই পেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বলা যায় ধূমপান, পরিবেশগত বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে, এবং খারাপ খাদ্য গ্রহণ  এসবই চুলের অকাল পাকা হওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে। 



আপনি যদি আপনার চুল অকাল ধূসর হওয়ার নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন হন, তাহলে আপনার উচিত ভালো একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলা। এর ফলে কোন অন্তর্নিহিত চিকিৎসা পরিস্থিতি বাতিল করতে এবং স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধির জন্য কৌশল নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন। চুল পাকে কোন হরমোনের অভাবে আর কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পাকে তাও জানতে পারবেন । 



                                                                                  

আমি জানি অল্প বয়সে চুল পড়া অনেকের কাছে কষ্টদায়ক হতে পারে, যদিও কিছু পরিমাণে চুল ধূসর হওয়া বার্ধক্যের একটি প্রাকৃতিক অংশ, কিন্তু অকালে ধূসর হওয়া অনেক লোকের জন্য বিরক্তিকর।পাকা চুল ফের কাঁচা হবে এবং চুল পাকা থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে এখানে কয়েকটি টিপস রয়েছে যা অল্প বয়সে চুল পাকার সমাধান বা অল্প বয়সে চুল পাকা প্রতিরোধ বা ধীর করতে সাহায্য করতে পারে: 



১. স্বাস্থ্যকর ডায়েট বজায় রাখুন: ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খাবার চেষ্টা করবেন কেননা এই সমস্ত খাবার আপনার স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধি এবং অকাল ধূসর হতে রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাছাড়া আপনি একটা বিষয়ে লক্ষ্য রাখবেন যে আপনার শরীর প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি 12 এবং ফলিক অ্যাসিড ঠিকঠাক মতো পাচ্ছে কিনা। এতে আপনার মাথার চুল অকালে পেকে যাওয়া কিছুটা রোধ করবে। 



২. ধূমপান এড়িয়ে চলুন: আপনি কি জানেন ধূমপানের সাথে চুলের অকাল পাকা হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে, যদিও কথাটি শুনে আপনার একটু অবাক লাগতে পারে তবুও এটা কিন্তু সত্য। তাই ধূমপান এড়িয়ে চলুন বা আপনি যদি বর্তমানে ধূমপান করেন তবে তা ত্যাগ করার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার অল্প বয়সে চুল সাদা হওয়া প্রতিরোধ করবে। তাই আপনারা যদি এরকম অভ্যাস থেকে থাকে আজকে থেকেই তা বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন।



৩. মানসিক চাপ কমান: অকালে চুল পাকার কারণ হিসেবে আমি আপনাদের অলরেডি মানসিক চাপ সম্পর্কে জানিয়েছি। উচ্চ মাত্রার মানসিক চাপ আপনার চুল অকালে পেকে যেতে সাহায্য করে। তাই আপনি আপনার মানসিক চাপ কমানোর জন্য বা স্ট্রেস থেকে ওভারকাম করার জন্য স্বাস্থ্যকর উপায় খুঁজুন, যেমন: ব্যায়াম, ধ্যান বা প্রকৃতিতে সময় কাটানো ইত্যাদি। এই অভ্যাসগুলো তৈরি করলে দেখবেন আপনার ভেতরের মানসিক চাপগুলো ধীরে ধীরে কমে আসবে ফলে মাথার চুল আপনার অকালে পেকে যাওয়া সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে।



৪.পরিবেশগত ক্ষতি থেকে চুলকে রক্ষা করুন: চুল অকালে পেকে যাওয়ার ক্ষেত্রে পরিবেশগত কারণগুলির এক্সপোজার যেমন দূষণ, ইউভি রশ্মি এবং কঠোর রাসায়নিক চুলের ক্ষতি করতে পারে এবং অকালে ধূসর হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি যেটা করতে পারেন তা হল মাথায় টুপি পরুন বা সূর্য থেকে আপনার চুলকে রক্ষা করতে UV সুরক্ষা সহ চুলের পণ্য ব্যবহার করুন এবং আপনার চুলকে কঠোর রাসায়নিকের সংস্পর্শে এড়ান। এর ফলে দেখবেন আপনার অকালে চুল পেকে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে।



৫. পর্যাপ্ত ঘুম: স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধি সহ সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম গুরুত্বপূর্ণ।  প্রতি রাতে কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমের লক্ষ্য রাখুন। এতে করে দেখবেন আপনার চুলের ধূসর বর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে।



মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে জেনেটিক্স অকাল ধূসর হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে এবং এটি সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধযোগ্য নাও হতে পারে।  যাইহোক, উক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে আপনার চুল এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধিকে উন্নীত করতে এবং অকাল ধূসর হওয়াকে বিলম্বিত করতে সাহায্য করতে পারে।  আপনি যদি অকাল ধূসর হওয়ার বিষয়ে উদ্বিগ্ন হন, তবে নির্দেশনার জন্য আপনার ডাক্তার বা চুলের যত্ন পেশাদারের সাথে কথা বলুন। অতিরিক্ত চিন্তা না করে ডক্টরের শরণাপন্ন হন এটাই ভালো হবে। কেননা চুল পেকে যাওয়ার টেনশন করলে দেখা যাবে আপনি চুল পাকার টেনশন করেই নিজের চুল পাকিয়ে ফেলছেন। 



আরো পরুনঃ




আরো জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন.........!

লেখকঃ মোঃ হাসিবুল হাসান 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ