টেকনোলজি আমাদের দুনিয়াকে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করে দিচ্ছে। বর্তমান সময়ের দিকে যদি লক্ষ্য করি তাহলে দেখা যায় আমরা ছোট মোবাইল দিয়ে এমন সকল কিছুই করতে পারি যা পূর্বে কম্পিউটার দিয়েও করতে পারতাম না। ড্রাইভার বিহীন গাড়ি চালানো এমনকি ড্রন পর্যন্ত চলে এসেছে। এটা তো শুধুমাত্র শুরু কেননা ভবিষ্যতে এমন আরো অনেক কিছু আবিষ্কার হতে যাচ্ছে যা সম্পূর্ণ পৃথিবীকে আরো পরিবর্তন করে ফেলবে। তাহলে চলুন এখন আমি আপনাদের এমনই দশটি টেকনোলজি সম্পর্কে জানাই যা সম্পর্কে জানলে আপনার চোখ কপালে উঠে যাবে।
Number One: Roller Guard Rails
প্রতিনিয়ত আমরা পত্র-পত্রিকায় এক্সিডেন্টের খবর দেখতে পাই। এমন কোন দিন পৃথিবীতে যায় না যেদিন পৃথিবীর কোন দেশে এক্সিডেন্ট হয় না। অধিকাংশ অ্যাক্সিডেন্টগুলো হয় গাড়ি আটকানো ব্যারিয়ার্স গুলোর মধ্যে। কেননা প্রতিটা মোরেই দ্রুত চালানেওয়ালা গাড়ি আসে আর কন্ট্রোল না করতে পেরে সেটার মধ্যে লাগিয়ে দেয়। ফলে গাড়ি ভেঙে চুরমার হয়ে যায় এমনকি মাঝে মাঝে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু এখন আর এমন হবে না কেননা চায়না এমন এক ধরনের টেকনোলজি আবিষ্কার করে ফেলেছে যেখানে লোহার তৈরি করা এই ব্যারিয়াসগুলো এখন আপনাকে রাবারের মতো ফ্লেক্সিবল প্রোভাইড করবে।
এই ব্যারিয়ার্স গুলো নির্মাণ করেছে ইথানাইল ফিনাইল এসিটেট দিয়ে। এটা অ্যাক্সিডেন্ট হবার ফলে আশা ইম্প্যাক্ট এনার্জিকে এবজর্ভ করে আর সেই এনার্জিকে রোডেশন এনার্জি তে পরিবর্তন করে। ফলে নরমালি অ্যাক্সিডেন্টে যত ক্ষতি হত তার থেকে অনেক বেশি কম ক্ষতি হয়। আর এটা রোটেট করে গাড়িকে ব্যারিকেটস থেকে রাস্তায় পুনরায় ঘুরিয়ে দেয়। আশা করা যায় খুব শীঘ্রই এই টেকনিক দুনিয়ার অন্য সকল দেশেও দেখা যাবে।
Number Two: Blockchain
ইন্টারনেটের দুনিয়াতে রেভ্যুলেশন আসছে। আর সেটাকে আনার পরিপূর্ণ ক্রেডিট যাচ্ছে এই ব্লগ চেইন টেকনিক এর উপর। আপনি বিটকয়েনের নাম তো অবশ্যই শুনেছেন যেটাকে কারেন্সি রুপে পরিবর্তন করা হয়। আর এখন সেই জিনিসটাকেই আরো এডভান্স লেভেলে নিয়ে যাবার জন্য বানানো হয়েছে ব্লক চেইন টেকনিক। জি হ্যাঁ আসলে ব্লকচেইন হল এক ধরনের টেকনোলজির এক প্ল্যাটফর্ম যেখানে শুধুমাত্র ডিজিটাল কারেন্সিই নয় বরং যে কোন জিনিসকে ডিজিটাল করে সেটার রেকর্ড বানিয়ে রাখতে পারে। অর্থাৎ ব্লক চেইনকে এক ধরনের ডিজিটাল লেজার বা এক ধরনের এক্সচেঞ্জ প্রসেস।
যেটা ডেটা ব্লকের সাহায্যে চলে। প্রটেক্ট ব্লক ইনকরাপশন এর সাহায্যের সুরক্ষিত থাকে। যেটা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ব্লক একে অন্যের সাথে কানেক্ট থাকে। এটা অনেক পুরনো টেকনিক। এটা সর্বপ্রথম ১৯৯১ সালে স্টুয়ার্ট হাবার এবং ডাব্লিউ স্কট স্টরনেটা এপ্লাই করেছিল। এই টেকনিকের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো ডিজিটাল ডকুমেন্টসগুলো টাইম স্টাম্প করা। যাতে এটার উপরে কেউ কোনো কন্ট্রোল না করতে পারে। এরপর ২০০৯ সালে সাতোশি নাকামতি ব্লকচেন ব্যবহার করে বিটকয়েন আবিষ্কার করে দুনিয়াতে হইচই ফেলে দিয়েছিল।
Number Three: Hologram
বন্ধুরা আপনারা যেকোনো ধরনের প্রোডাক্টের প্যাকেটে হলোগ্রাম তো অবশ্যই দেখেছেন। কিন্তু ফাস্ট ইন্টারনেট আসার পর এই টেকনিকের প্রয়োগ ইভেন্ট, ফিল্ম এবং প্রেজেন্টেশনে করা হবে। এটার মাধ্যমে ভার্চুয়াল পিকচার প্রয়োগ করে বাস্তব জিনিসের মত দেখানো হবে। যদি কোন ইভেন্ট আমেরিকাতে হয়ে থাকে তাহলে সেটার হলোগ্রাম প্রয়োগ করে বাংলাদেশ বা ভারত বা অন্য যেকোনো দেশে একই অনুভবের সাথে ওই একই ইভেন্ট দেখতে পারবে।
Number Four: Air Taxi - Bell Helicopter
হেলিকপ্টার বানানেওয়ালা কোম্পানি বেল, এয়ার ট্যাক্সির প্রটোটাইপ অলরেডি তৈরি করে ফেলেছে। আশা করা যায় ২০২৩ সালে সেটা লঞ্চও করতে পারবে। এই এয়ার টেক্সীতে শুধুমাত্র চারজন লোক বসতে পারবে। আপনি জানলে অবাক হবেন ক্যাব সেবা দেওয়া কোম্পানি উবার এখন থেকেই এয়ার টেক্সির সাথে পার্টনারশিপে কাজ করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।
Number Five: Double Language Earbuds
গুগল অনেকগুলো ট্রান্সলেশন টুলস প্রয়োগ করেছে যেটার সাহায্যে আপনি খুব সহজে একটা ভাষাকে অন্য ভাষায় কনভার্ট করতে পারবেন। এখন গুগল কোম্পানি এমন একটা টেকনিক নিয়ে আসছে যেটার সাহায্যে রিয়াল টাইম ট্রানসলেশন করা যাবে। গুগল কয়েক বছর পূর্বেই এটার প্রোটোটাইপ পেশ করেছিল। এই ইয়ার পেড পৃথিবীর চল্লিশটা ভাষা ট্রান্সলেট করতে পারবে। এটার মধ্যে ডাবল স্পিকার রয়েছে যেটা এক কান দিয়ে শোনে আরেক কানে সেটা অটো ট্রান্সলেট করে দেবে।
Number Six: Wireless Laptop
আজ পর্যন্ত আপনি ওয়ারলেস চার্জার হিসেবে মোবাইল ওয়ারলেস চার্জার এর নামটাই শুনেছেন। কিন্তু ভবিষ্যতে আপনার জন্য ল্যাপটপেও ওয়ারলেস চার্জার সংযুক্ত হবে। যদিও এখন এই টেকনোলজি অনেক পাওয়ারফুল না যে খুব সহজেই ওয়ারলেস চার্জার এর সাহায্যে ল্যাপটপ চার্জ দেওয়া যাবে। কিন্তু কয়েক বছর যাবত এই টেকনোলজির অনেক উন্নতি হয়েছে। আর এমন টেকনোলজি দেখার সম্ভাবনা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়ে। ইন্টেল অল এর মত বড় বড় কোম্পানি ওয়ারলেস চার্জারের ডেমো দেখিয়েছে। যদি এটা সফলভাবে হয়ে যায় তাহলে আপনি আপনার মোবাইল এর মত ল্যাপটপেও ওয়ারলেস চার্জার এর সাহায্যে চার্জ দিতে পারবেন।
Number Seven: Space Tourism
বর্তমানে এমন সময় এসেছে যে এখন শুধুমাত্র অ্যাস্ট্রনর্ডরাই স্পেসে যেতে পারবেনা চাইলে আপনিও আপনার গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটানোর জন্য স্পেস থেকে ঘুরে আসতে পারবেন। আমেরিকার কোম্পানি ভার্জিন গ্যালাক্তিক পৃথিবী থেকে স্পেস পর্যন্ত যাত্রা করানোর জন্য প্রথম সফল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। এ ট্রাইলের জন্য দুই পাইলটের সাথে ছয়টা লোক এবং একটি পুতুল নিয়ে বিমানটি পৃথিবী থেকে ৮২ কিলোমিটার দূর উপরে স্পেছে গিয়েছিল। এই সাকসেসফুল ট্রায়ালার পর এই কোম্পানি আগামী বছর থেকে তাদের কমার্শিয়াল স্পেস টোরিজম সার্ভিসকে অফিশিয়ালি লঞ্চ করবে। এটা সাহায্যে পৃথিবীর লোকেরা স্পেস থেকে ঘুরে আসতে পারবে। যদিও এই ট্যুর দেওয়ার পূর্বে সকলকে স্পেশাল ট্রেনিং দেওয়া হয় তারপরেই তাদেরকে স্পেসে নিয়ে যাবার জন্য সার্টিফিকেট দেয়।
আরো পরুনঃ বিশ্বের সবচেয়ে আমেজিং বাইসাইকেল!
এই ব্লগটি ভিডিও রুপে দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন............ !
আরো আর্টিকেল পরতে এখানে ক্লিক করুন.........!
লেখক: মো: হাসিবুল হাসান
0 মন্তব্যসমূহ