Ads

লেখাপড়া কঠিন ভাবে না নিয়ে স্মার্টলি কিভাবে পড়তে হয় শিখে নিন! | How To Study Smart and Effectively Not Hard


মরা সকলেই ক্লাসে বেস্ট পারফরম্যান্স করার জন্য একে অন্যের সাথে কম্পিটিশন করি। আবার কখনো কখনো কিছু শিক্ষার্থীরা এক্সামের সময় রাত দিন এক করে পড়তেই থাকে। কিন্তু এরপরও তাদের ভালো রেজাল্ট হয় না। আবার এমনও কিছু স্টুডেন্ট রয়েছে যারা এক্সাম দেওয়ার পূর্বে বলে ভাই আমি তো গতকাল রাতে কিছুই পড়িনি তবে রেজাল্ট দেওয়ার সময় দেখা যায় তারাই ভালো মার্কস পেয়েছে। এটার কারণ হল তারা স্টাডিকে হার্ড হিসেবে গ্রহণ করেনি বরং তারা স্টাডিকে স্মার্টলি কন্ট্রোল করে। 



সাধারণত "এ" গ্রেড স্টুডেন্ট অন্যদের মতো এত বেশি পড়ালেখা করেনা। তারা নির্দিষ্ট সময় ধরে অল্প সময় ইফেক্টিভলি মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করে। পড়ায় মন বসে না কেন, সারাদিন পড়াশোনা করার উপায়, পড়া বোঝার উপায়, পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন এই ব্লগে। নিচে দেওয়া এই ৬ টি পয়েন্ট যদি আপনিও ভালোভাবে আয়ত্বে আনতে পারেন তাহলে আপনিও প্রতিটা এক্সাম এ ভালো মার্কস গেইন করতে পারবেন।


Number One Point: Quiz and Recall 

অধিকাংশ স্টুডেন্টরা একটা বড় মিসটেক করে থাকে সেটা হলো তাদের কোন জিনিস পড়ার প্রয়োজন হলে তখন তারা সেই টপিক লিখে নোট তৈরি করে তা বারবার দেখে দেখে মুখস্ত করতে থাকে। সে নোট দেখে এক লাইন পরে এবং চোখ বন্ধ করে একই পরা রিপিট করে। আর তার কাছে মনে হয় তার সকল কিছু মুখস্ত হয়ে গেছে। আসলে বাস্তবতা হল ওই পড়াটা তার শর্ট টার্ম মেমোরিতে স্টোর হয়েছে শুধুমাত্র। যেটা লং টার্মে মনে থাকে না।



ফলে যখন সে ওই একই পড়াটা এক্সামে মেমোরাইজ করার চেষ্টা করে তখন তার কিছুই মনে আসে না। কেননা সে এতক্ষণ পড়ে পড়ে মেমোরাইস করার চেষ্টা করছিল কিন্তু এক্সাম হলে সে তো আর এটা পড়ে পড়ে উত্তর করতে পারবে না! তাই আপনি যখন কুইজ এবং রিকল মেথড ব্যবহার করবেন আর একই জিনিস বারবার পড়ে মেমোরাইজ করার চেষ্টা করার পরিবর্তে যদি সেটা আপনি নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, তারপর সেটাকে আপনি লিখে লিখে বুঝে বুঝে মনে করার চেষ্টা করবেন এবং ওই বিষয়টা নিজে নিজেই এক্সপ্লেইন করবেন। এতে করে আপনার পড়াটা মাথায় ধীর্ঘ সময় যাবত মনে থাকবে। কেননা আপনি লেখার প্র্যাকটিস করেছিলেন, শুধুমাত্র মুখস্ত করেননি, ফলে লেখার ক্ষেত্রে আপনার সকল কিছুই মেমরাইজ হবে।


Point Number Two: Pseudo work vs Deep work

সিউডোওয়ার্ক হলো সেই সকল কাজ হয়, যেখানে আপনি আপনার বই এর সাথে ডেস্ককে বসবেন এবং একই সময় আপনার স্মার্টফোন আপনার সাথে থাকবে। তখন মোবাইলে কন্টিনিউ নোটিফিকেশন আসতে থাকবে এবং আপনাকে কন্টিনিউ ডিস্টার্ব করতে থাকবে। যা আপনাকে কাজে ফোকাস এবং কন্সেন্ট্রেশন করতে দিবে না। অপরদিকে ডিপ ওয়ার্ক এ আপনার ফোকাস শুধুমাত্র একটা জিনিসের উপরেই হয়। ওই সময় আপনার ব্রেন আপনার কাজে ফোকাস দেওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোন অপশন থাকে না।



যেখানে সিউডোওয়ার্ক এ আমাদের ইনটেনসিটি কম থাকে আর সেই কাজ শেষ করতে অনেক বেশি সময় লাগে। যেটা অনেক বেশি মেন্টাল এনার্জিকে ক্ষতি করে। আর সেই কাজের কোয়ালিটি অনেক বেশি ডাউন হয়ে যায়। অপরদিকে ডিপ ওয়ার্ক এ আমাদের ইনটেনসিটি অনেক হাই থাকে। ফলে আমাদের সময় কম লাগে ফলে আমরা ইফেক্টিভলি ওই কাজটি সম্পন্ন করতে পারি। তাহলে কিভাবে আমরা আমাদের ইন্টেনসিটি কে ইনক্রেস করে  ডিপ ওয়ার্ক কে আচিভ করতে পারি? এটার সলিউশন আমরা নেক্সট পয়েন্টে পেয়ে বলবো।


Point Number Three:  Where, When and How Long?

আমরা আমাদের নিজেদেরকে এই তিনটা প্রশ্ন করা উচিত। হোয়ার, হোয়েন এবং হাওলং? হোয়ার এ আপনাকে আইসোলেশন প্লেস দেখতে হবে, যেখানে কেউ আপনাকে ডিস্টার্ব করতে পারবে না। আপনি একা থাকবেন আপনার আশেপাশে কেউ থাকবে না। এবং আপনার মোবাইলটাও সাইলেন্ট থাকবে। আপনার ডেস্ককে শুধুমাত্র আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া কোন কিছুই রাখবেন না। হোয়েন মানে আপনার যতটুকু সম্ভব দ্রুত পড়া শেষ করা উচিত। কেননা দিন যত শেষ হয় আমাদের মেন্টাল এনার্জি তত দ্রুত ক্ষতি হতে থাকে।



আর শেষে খুব কম এনার্জি থাকে। এর জন্য সকালে খুব দ্রুত উঠে আপনার মর্নিং রুটিন ফলো করা উচিত। এবং আপনার কাজের দ্রুতই লেগে পড়া উচিত। হাও লং এর জন্য আপনার কাজকে পঞ্চাশ মিনিটের ডিউরেশনে ডিভাইড করতে হবে। এখানে প্রতি ৫০ মিনিট পর আপনাকে ১০ মিনিটের জন্য রেস্ট নিতে হবে। তবে আপনি শুরুর দিকে ৩০ মিনিটের টার্গেট সেট করতে পারেন। যেখানে প্রতি ৩০ মিনিট পর আপনি ৫ মিনিটের জন্য ব্রেক নিবেন। আর ধীরে ধীরে এই টাইম টাকে বৃদ্ধি করতে থাকবেন। 


Point Number Four: Auto Pilot Schedule

স্টুডেন্টদের সাধারনত সকল কাজই ফিক্সড থাকে। আপনি আপনার সারাদিনের সিলেবাস আগে থেকেই জানেন। আপনার স্টাডির টাইমলাইন অলরেডি স্টাবলিস্ট থাকে আর আপনাদের সকল অ্যাসাইনমেন্ট এবং প্রজেক্ট এর ডেট লাইন থাকে। যেটার জেনারেলি ইনস্টিটিউশন, স্কুল, কলেজ, এবং টিচাররা ডিসাইড করে থাকে। কিন্তু আপনাকে একটা জিনিস খুব ভালোমতো কন্ট্রোল করতে হয় আর সেটা হল আপনার স্টাডি সিডিউল। 



উদাহরণ হিসেবে যদি বলি তাহলে ধরুন আপনি শুক্রবার জানতে পারলেন আপনার নেক্সট ফ্রাইডে মেথস বা যে কোন সাবজেক্টের এক্সাম হবে। সাধারণত এমন অবস্থায় ছাত্ররা প্রথম দিকের দিনগুলোতে লেখাপড়া একদমই করে না। লাস্টের কয়েকটা দিন প্রচুর পরিমাণে পড়ালেখা করে। যার ফলে আপনার বাকি অন্যান্য সিডিউল গুলো নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য আপনি সাত দিনের জন্য একটা নির্দিষ্ট টাইম ব্লক করে দিন। যে টাইম শুধুমাত্র আপনি ওই টেস্টের জন্য কিছু কিছু পড়বেন। এই কন্সিস্টেন্ট বেসিস মেইনটেইন করার ফলে পড়ালেখা গুলো আপনার ব্রেন খুব সহজে এবজর্ভ করতে পারবে। আর আপনার সম্পূর্ণ দিনটা নষ্ট হবে না।


Point Number Five: Take Care of Your Physical Health

অধিকাংশ স্টুডেন্টরা বলে তারা কাজে ফোকাস করতে পারে না এবং ফোকাস করতে গেলেই তাদের ঘুম চলে আসে। এখন আপনি বলুন এরকম খারাপ অভ্যাস করে কি আর এ প্লাস পাওয়া সম্ভব। এটার উত্তর হবে ডেফিনেটলিন নো। কেননা আপনার ফিজিক্যাল হেলথ আপনার একাডেমিক ক্রিয়াকলাপ এর ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। এখন "এ" গ্রেড স্টুডেন্ট হওয়ার জন্য আপনাকে অলিম্পিক এর মত বডি বানানোর প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র আপনার শরীরের সকল বডি ফাংশন গুলোকে সচল রাখতে হবে।



ধরুন আপনি এক জায়গায় যাওয়ার সময় রাস্তায় এক্সিডেন্ট করলেন এবং আপনার পায়ে ব্যান্ডেজ করা হলো এমন অবস্থায় আপনি রাতে পড়তে বসলে তখন আপনার মনোযোগ পড়ার থেকে পায়ের ব্যথার দিকে বেশি যাবে এখন যদি আপনার শরীরের উপর কন্ট্রোল না থাকে তাহলে আপনি পড়ালেখায় মনোযোগী হতে পারবেন না। আপনার ফিজিক্যাল হেলথ ঠিক না থাকলে আপনার শরীরের ছোট অসুস্থতার দিকে বেশি ফোকাস থাকবে আর পড়ালেখার ক্ষেত্রে সব সময় অমনোযোগী থাকবেন।


Point Number Six: 

কিছু কিছু স্টুডেন্টরা তাদের সমস্যাগুলো জমিয়ে রাখে আর এক্সামের পূর্বে তা সলভ করার চেষ্টা করে। যার ফলে এক্সাম নিয়ে তার ভেতর একটা ভয় এবং চিন্তা কাজ করে। এর জন্য আপনাকে যেকোনো জিনিস জানার জন্য আগ্রহী থাকতে হবে এবং যখন যেটাই সমস্যা মনে হবে তখন সেটা সমাধান করার চেষ্টা করবেন। আর সকল "এ" গ্রেড স্টুডেন্টরা একটা জিনিস নিয়ে পড়ে থাকে না তারা যে কোন একটা জিনিসের ডিপ নলেজ পর্যন্ত চলে যায়। কোন জিনিস সে না বুঝলে সাথে সাথে সেটা ফেলে রাখে না বরং সাথে সাথে সেটা সলভ করার চেষ্টা করে। 



এজন্য আপনার উচিত রেগুলার ক্লাসে এটেন্ড করা। কিছু স্টুডেন্টরা মনে করে তার ক্লাসে এটেন্ড করার প্রয়োজন নেই সে নিজে নিজে পরেই ভালো মার্কস আনতে পারবে। এরকম ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। আপনার টিচার যতই বোরিং হোক না কেন আপনার ডাউট গুলো ক্লাসের টিচারদের সাথে আলোচনা করুন এভাবে আলোচনার ফলে সেটা সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত ধারণা পাবেন। ফলে খুব সহজেই আপনি কনসেপ্ট গুলো বুঝতে পারবেন। যেগুলো সেল্ফ স্টাডি সাহায্য করা অনেক বেশি মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। 



যদি আপনিও এই ৬ টি পয়েন্ট ফলো করেন তাহলে আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি আপনার আজকের পর থেকে কোনো এক্সামই খারাপ হবে না। 






লেখক: মো: হাসিবুল হাসান

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ